মাস্ক না পরায় ১ ঘণ্টা ধরে ছাত্রলীগ নেতাকে পেটাল পুলিশ

নড়াইলে সাবেক ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মানিককে বেধড়ক পি’টিয়েছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এমনই অভিযোগ পাওয়া গেছে নড়াইলের শেখহাটি ফাঁড়ির ই’নচার্জ, সহকারী ই’নচার্জসহ বেশকয়েকজন পুলিশ সদস্যের বি’রুদ্ধে। এই ঘটনার পর আ’হত ছাত্রলীগ নেতা নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে চিকিৎসার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে চিকিৎসকের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন এবং আ’হত ছাত্রলীগ নেতা মানিককে জো’রপূর্বক নিয়ে আসেন সহকারী ই’নচার্জ এএসআই আলমগীর।

পুলিশের এমন অমানবিক আচরণে এই ঘটনার বিচার দাবি করে শনিবার (২৮ মার্চ) নড়াইলের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আ’হতের মা লতিফা বেগম। বর্তমানে মানিক গু’রুতর আ’হত অবস্থায় নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, তরিকুল ইসলাম মানিক ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। ক’রোনাভা’ইরাসেের কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিজ বাড়ি সদরের শেখহাটি গ্রামে চলে আসেন। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে তিনি কাঁচাবাজার করে ফেরার পথে বাজারের মধ্যে সাদা পোশাকে দুজন ব্যক্তি (পরে শুনেছি একজন শেখহাটি পুলিশ ফাঁড়ির ই’নচার্জ এসআই এনামুল ও অন্যজন কনস্টেবল) এখানে ক’রোনা ছড়াতে এসেছিস বলে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফে’লে দেয় এবং মা’রতে মা’রতে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।

সেখানে এসআই এনামুল, এএসআই আলমগীর ও কয়েকজন কনস্টেবল প্রায় এক ঘণ্টা থেমে থেমে রুল দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আ’ঘাত করে। পরে ফাঁড়ির সহকারী ই’নচার্জ আলমগীরসহ তিন পুলিশ সদস্য মানিককে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে নসিমনে সদর থানার ওসির কাছে নিয়ে গেলে তিনি এলাকায় গিয়ে বি’ষয়টি মীমাংসার কথা বলে ছেড়ে দেয়।

এরপর দুপুর ১টার দিকে মানিক সদর হাসপাতালের ইর্মাজেন্সি বিভাগে চিকিৎসা করাতে যায়। বি’ষয়টি এএসআই আলমগীর টের পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে বলে চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। এই বলে মানিকের ভাই রতনের কাছ থেকে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন এবং তাকে (মানিক) নিয়ে শেখহাটি চলে যায়। রাত ৮টার দিকে মানিকের শা’রীরিক অবস্থার অবনতি হলে অ্যাম্বুলেন্সে করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরিকুল ইসলাম মানিক জানান, ফাঁড়ির পুলিশ একজনের মাধ্যমে প্রস্তাব দিয়েছিল বি’ষয়টি টাকা দিয়ে মিমাংসা করতে। কিন্তু আমি কোনো অন্যায় করিনি বিধায় কোনো আপসে যাইনি। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

এ ব্যাপারে জে’লা ছাত্রলীগের সভাপতি চঞ্চল শাহরিয়ার মিম বলেন, শেখহাটি এলাকায় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠার পেছনে তার অনেক ভূমিকা রয়েছে। এ ঘটনায় ত’দন্তপূর্বক দোষীদের শা’স্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

শেখহাটি বাজার কমিটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম সরদার বলেন, ৬ থেকে ৭ জন পুলিশ মানিকের মাস্ক না থাকার অভিযোগে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বেধড়ক মা’রপিট করে। আমরা বাজার কমিটির লোকজন পুলিশের হাত-পা ধরলেও তারা কোনো কথা শোনেনি।

অ’ভিযুক্ত শেখহাটি ফাঁড়ির ই’নচার্জ এনামুল বলেন, স’রকারি নির্দেশ মোতাবেক আমরা ডিউটি পালন করছিলাম। তার মাস্ক পড়া ছিল না। তাকে এসব বি’ষয়ে পশ্ন করা সে পুলিশের সঙ্গে বেয়াদবি করে। তাকে মা’রা হয়নি। সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তিনি টাকার বিনিময়ে মিমাংসার বি’ষয়টি অস্বীকার করেন। এএসআই আলমগীর মানিককে চিকিৎসা নিতে বা’ধা দিয়েছে বি’ষয়টি ঠিক নয় বলে জানান।

এ বি’ষয়ে কথা বলতে এএসআই আলমগীরকে কয়েকবার ফোন করা হলে হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ ঘটনায় নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) বলেন, বি’ষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। দেশের এ অবস্থায় হয়তো কিছুটা ধাক্কাধাক্কি হতে পারে। তারপরও বি’ষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।